অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, বুধবার, ৩১শে ডিসেম্বর ২০২৫ | ১৭ই পৌষ ১৪৩২


লালমোহনে উলঙ্গ করে নির্যাতনকারী সেই হাসানের ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর


বাংলার কণ্ঠ ডেস্ক

প্রকাশিত: ৩১শে অক্টোবর ২০১৯ রাত ০৯:৫৯

remove_red_eye

৮৮১

 

বাংলার কণ্ঠ প্রতিবেদক : ভোলার লালমোহন উপজেলায় আলোচিত ফেসবুকে ভাইরাল ভিডিও হওয়ার ঘটনা দুই সন্তানের সামনে এক যুবককে নির্যাতনকারী সেই হাসানের ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। বৃহস্পতিবার দুপুরে আদালতে নির্যাতনকারী হাসানের রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করা হয়।

স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, এক বছর আগে লালমোহন কালমা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের চরল²ী গ্রামের শাহার আলী বাড়ির মৃত আব্দুল মুন্নাফের ছেলে মোটরসাইকেল চালক জসিমকে শত শত মানুষ ও তার দুটি শিশু সন্তানের সামনে উলঙ্গ করে নির্যাতন করা হয়। নির্যাতনকারী হাসান কালমা ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের কালমা গ্রামের মিস্ত্রী বাড়ির আবুল হোসেনের ছেলে। মোটরসাইকেল চালক জসিমকে তার দুটি শিশু সন্তানের সামনে বিএনপি ও সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়ে হাত পা বেঁধে উলঙ্গ করে নির্মমভাবে নির্যাতন করে হাসান। কিন্তু ওই ঘটনা তখন কোন এক ব্যাক্তি মোবাইলে ভিডিও ধারন করলেও তার তখন প্রকাশ করেনি। কিন্তু গত ২৭ অক্টোবর রাতে হাসানকে অন্য একটি মামলায় গ্রেফতার করে। পুলিশ জানায়, হাসানের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের পাহাড়তলী ও হালিশহর থানায় মানব পাচার, ডাকাতি ও চুরির অভিযোগে আরো ৩টি মামলা রয়েছে। এছাড়া গত ১ অক্টোবর ডাওরী বাজারে ব্যবসায়ী জহুরুল ইসলাম মোল্লার বাড়িতে ডাকাতির ঘটনায়ও সন্দেহভাজন আসামী হাসান।
এদিকে হাসানকে পুলিশ গ্রেফতারের পর জসিমকে নির্যাতনের ভিডিওটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পরে। ফেসবুকে ওই ভিডিও ভাইরাল হয়ে গেলে শুরু হয় তোলপাড় হয়। পরে লালমোহন থানা পুলিশ নির্যাতিত জসিমের স্ত্রী জয়নব বিবিকে ডেকে এনে ২৮ অক্টোবর দুপুরে থানায় একটি মামলা গ্রহন করেন। তার পর হাসানকে আটক জসিমের উপর নির্যাতনের ঘটনায় গ্রেফতার দেখিয়ে পুলিশ আদালতে ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন ।
লালমোহন থানার অফিসার ইনচার্জ মীর খায়রুল কবীর জানান, ডাওরী বাজারে নির্যাতনের শিকার জসিমের স্ত্রী জয়নব বিবির মামলায় ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হলে সিনিয়ার জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট ফরিদ আলম বৃহস্পতিবার তার ৭ দিনের রিমান্ডই মঞ্জুর করেন।

উল্লেখ্য, দীর্ঘ প্রায় ১৮ বছর পর বাবাকে উলঙ্গ করে নির্যাতনকারী সেই বিএনপির ক্যাডার জসিমকে একই ভাবে প্রকাশ্য উলঙ্গ করে পিটিয়ে শোধ নিয়েছেন হাসান। তার পিতাকে উলঙ্গ করে নির্যাতনের বীভিষীকাময় সেই দৃশ্য সে সময় কেউ ভিডিও করা তো দূরের কথা ,কেউ তখন এগিয়েও আসেনি বলে হাসানের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়। কিন্তু হাসান জসিমকে ডিজিটিাল যুগে প্রকাশ্যে মারধর করতে গিয়ে মোবাইলে ভিডিও থেকে ভাইরাল হয়ে ফেঁসে যায়। হাসানের ছোট ভাই সোহাগ হোসেন বলেন,তার ভাই নামে অভিযোগ করা হয়েছে মাদক বিক্রি না করায় জসিমকে মারধর করে তা সত্য নয় বলেও তিনি দাবী করেন।
২০০১ সনের পর শবে কদরের নামাজ পরে রাত ১১টার দিকে আবুল হোসেন ড্রাইভার কালমা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আক্তারের বাড়ির কাছে মসজিদ থেকে বেড় হন। সাথে ছিলো ছেলে সফিক। হঠাৎ করেই তাদের উপর চরে বর্বর হামলা। আওয়ামীলীগ করার অপরাধে তাদের উপর চলে নির্যাতন। মারধর করতে করতে এক পর্যায়ে উলঙ্গ করে আবুল হোসেন ড্রাইভারকে পাশের একটি ডোবায় ফেলে দেয়া হয়। এসময় ছেলে তার বাবা কে বাঁচাতে গেলে তাকে মেরে একটি হাত ভেঙ্গে দেয়। কিন্তু ভয়ে তখন তারা এর প্রতিবাদ তো দূরে কথা বিচারও চায়নি। লালমোহন কালমা ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান আক্তার হোসেন হাসানের পিতার উপর নির্যাতনের ঘটনা সত্য বলে স্বীকার করে বলেন, বিএনপির ক্যাডার জসিম ওই সময় এলাকায় অনেক অপকর্ম করে।