অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, শুক্রবার, ২৯শে মার্চ ২০২৪ | ১৫ই চৈত্র ১৪৩০


দৌলতখানে নিখোঁজ যুবকের মরদেহ উদ্ধার


বাংলার কণ্ঠ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২৭শে নভেম্বর ২০২২ রাত ০৯:৫০

remove_red_eye

১২৭

বাংলার কণ্ঠ প্রতিবেদক: ভোলার দৌলতখান উপজেলায় পুলিশের ধাওয়া খেয়ে মেঘনা নদীতে পড়ে নিখোঁজ হওয়ার ৪ দিন পর যুবক নোমানের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। রবিবার সকালে স্থানীয়রা মেঘনা নদীতে ভাসমান অবস্থায় মরদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দিলে তারা গিয়ে উদ্ধার করেছে। এদিকে নোমানের মৃতদেহ উদ্ধারের খবরে তাঁর আতœীয় স্বজন ও স্থানীয়রা ঘটনা স্থলে ভিড় করে। স্বজনদের আহাজারিতে বাতাস ভারি হয়ে ওঠে। পরে পুলিশ মৃতদেহ ময়না তদন্তের জন্য ভোলা সদর হাসপাতালে পাঠিয়েছে। অপরদিকে এ ঘটনায় অভিযুক্ত পুলিশের ২ কনষ্টবলকে সামািয়ক বরখাস্ত ও ২ পুলিশ কর্মকর্তাকে ক্লোজড করা হয়েছে। এছাড়াও ওই ঘটনায় পুলিশের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
স্থানীয় ও বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে, গত বৃহস্পতিবার ২৪ নভেম্বর দুপুর ১টার দিকে দৌলতখান উপজেলার পাতার খাল মাছ ঘাট সংলগ্ন মেঘনা নদীর তীরবর্তী এলাকায় নোমানসহ বেশ কয়েক জন জুয়া খেলছিল। এ সময় কয়েক জন পুলিশ সদস্য জুয়ার আসরে গিয়ে তাদেরকে ধাওয়া করে। পুলিশের ধাওয়া খেয়ে মেঘনা নদীতে নোমানসহ আরো কয়েকজন পড়ে যায়। তাদের মধ্যে সবাই সাঁতরে তীরে উঠে আসতে পারলেও নোমান উঠে আসতে পারেনি। এরপরই নিখোঁজ হয় নোমান। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছে ও অভিযোগ রয়েছে,,নোমান নদীতে পড়ে যাওয়ার পর পুলিশ তাকে উদ্ধার না করে তাকে লক্ষ্য করে ইট নিক্ষেপ করতে থাকে। তাদের ধারণা পুলিশের ইটের আঘাতে নোমান নদী থেকে সাঁতরে তীরে উঠে আসতে পারেনি। নিখোঁজ নোমানের সন্ধানে দৌলতখান ফায়ার সার্ভিসের টিম ও কোস্টগার্ডের ডুবুরি দল চেষ্টা চালিয়ে তার কোন সন্ধান পায়নি। নোমানের স্বজনরা মেঘনা নদীতে ট্রলার যোগে নোমানের সন্ধান পেতে মাইকিংও করেছেন। কিন্তু তাকে পাওয়া যায়নি। অবশেষে রবিবার সকালে দৌলতখান উপজেলার পাতার খাল মাছঘাট থেকে তার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। নোমান মাছঘাটের একজন শ্রমিক ছিলেন। নিখোঁজের সংবাদ সংগ্রহে সাংবাদিকরা নোমানের বাড়ি গেলে স্ত্রী নাসরিন আবেগ আপ্লুত হয়ে বলেন, যেই পুলিশ আমার স্বামীকে মেরেছে আমি তার বিচার চাই। সেই পুলিশের ফাঁসি চাই।
দৌলতখান থানার ডিউটি অফিসার (এসআই) আবু হানিফ লাশ উদ্ধারের বিষয়টি সাংবাদিকদের কাছে নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনা স্থলে গিয়েছে। নিহতের পরিবার নোমানের মরদেহ শনাক্ত করেছে। এছাড়াও নিখোঁজের পর  এ ঘটনায় কনস্টেবল মো. রাসেল ও সজীব নামে দুই পুলিশ কনস্টেবলকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয় এবং দৌলতখান থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) স্বরূপ কান্তিপাল ও সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মো. সোহেল রানাকে ক্লোজড করা হয়েছে।

দৌলতখান থানার ওসি জাকির হোসেন জানান, এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে থানায় একটি অপমৃত্যর মামলা হয়েছে। অন্যদিকে ওই ঘটনায় লালমোহন সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জহুরুল ইসলামকে প্রধান করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য দুইসদস্য হলেন, জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) ভারপ্রাপ্তকর্মকর্তা (ওসিডিবি) মো. এনায়েত হোসেন ও ভোলাসাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেলের ভারপ্রাপ্তকর্মকর্তা (ওসি) মো. জহিরুল ইসলাম কামরুল।