অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, শুক্রবার, ২৯শে মার্চ ২০২৪ | ১৫ই চৈত্র ১৪৩০


পদ্মায় নিখোঁজ চরফ্যাসনের ছাত্রলীগ নেতার লাশ জাজিরায় উদ্ধার


বাংলার কণ্ঠ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২৮শে জুন ২০২২ সকাল ১০:০৫

remove_red_eye

১৭৬

 দ্বীপজেলা ভোলার চরফ্যাশন উপজেলা থেকে পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে ঢাকায় যাওয়ার পথে উত্তাল পদ্মায় ট্রলার ডুবে নিখোঁজ ছাত্রলীগ নেতা আল আফছার তামিমের (২৪) লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
সোমবার (২৭ জুন) জাজিরার চিডার চর এলাকা থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। ঘটনাস্থল থেকে ফেসবুকে নিজের আইডিতে পোস্ট করে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চরফ্যাসন উপজেলা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক আহসান আসিব, এছাড়া আফছার তামিমের খালাতো ভাই রাফসান শরীফ ইমনও গনমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। অপর দিকে পদ্মায় ট্রলার ডুবির ঘটনায় ২২ যাত্রীকে উদ্ধার করায় পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কবির বিন আনোয়ারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন উদ্ধার হওয়া যাত্রীরা।

জানা যায়, গত শনিবার (২৫জুন) দুপুরে স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধন শেষে একটি যাত্রীবাহী ট্রলারে করে। ২৩জন যাত্রী ঢাকার উদ্দেশ্যে যাওয়ার সময় পদ্মার প্রবোল স্রোত ও ঝড়ো বাতাসের উত্তাল ঢেউয়ের আঘাতে ওই ট্রলারটির তলা ফেটে গিয়ে ডুবে যায়। এসময় ওই ট্রলারে বিআইডবিøউটিএ’র সহকারিপরিচালক শরীফ ইসলাম ও চরফ্যাশন উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতিমেহেদী হাসান সোগাগ এবং যুবরীগ নেতা সিদ্দিকুর রহমান মামুনসহ ২৩জন ছিলেন। এ বিষয়ে উদ্ধার হওয়া যাত্রিরা আল্লাহ তায়ালার শুকরিয়া আদায় করে বলেন, আমরা সেতু উদ্বোধন শেষে ঢাকায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে কাঁঠালবাড়ী ঘাট থেকে মাওয়া ঘাটে যাওয়ার জন্য একটি ট্রলারে উঠি। মাওয়া ঘাট উপকূলের মাঝ নদীতে স্রোত ও ঝড়ো বাতাসের উত্তাল ঢেউয়ের আঘাতে ট্রলারটির তলা ফেটে ডুবে যায়। এসময় আমরা চিৎকার করে প্রাণ বাচাঁনোর আকুতি জানিয়ে হাবুডুবু খেয়ে ঢেউয়ের মধ্যে সাঁতার কাটতে থাকি। মেহেদী হাসান সোহাগ বলেন, স্রোত আমাদের টেনে নিয়ে যাচ্ছিল। সিদ্দিকুর রহমান মামুন বলেন, এসময় একজন সচিব যাওয়ার পথে তার বোটে করে আমাদের উদ্ধার করেন এবং চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন।


পানি উন্নয়নবোর্ড ভোলা-২ সূত্রে জানা যায়, সেতু উদ্বোধন অনুষ্ঠান শেষে ইসাবেলা ফাউন্ডেশনের এমভি
তূর্য নামের একটি রিসার্চবোটে করে ওই রুট দিয়েই পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের
সিনিয়র সচিব কবির বিন আনোয়ার যাওয়ার পথে ডুবে যাওয়া ট্রলারের যাত্রীদের দেখতে পান। তাৎক্ষনিক তিনি পানি উন্নয়নবোর্ডের একটি স্পিডবোট খবর দিয়ে নিয়ে আসেন এবং তার দূরদর্শী নেতৃত্বে ডুবন্ত প্রায় ২২ জন যাত্রীকে উদ্ধার করেন। এ সময় এই সচিবের সফর সঙ্গীরাসহ সেনাবাহিনীর সদস্যরাও উদ্ধার অভিযানে সহায়তা করেন। উদ্ধার পরবর্তী গুরুতর অসুস্থদের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। ডুবন্ত প্রায় ২২যাত্রীকে উদ্ধার করায় চরফ্যাশন উপজেলার সামাজিক সংগঠন ও রাজনৈতিক এবং বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক নেতৃবৃন্দসহ চরফ্যাশন উপজেলাবাসী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কবির বিন আনোয়ারের এ মহানুভবতার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। এদিকে ট্রলার ডুবির ঘটনায় ২২জন যাত্রী জীবিত উদ্ধার হলেও চরফ্যাশন সরকারী কলেজ ছাত্রলীগের যুগ্ম আহবায়ক ও অনার্স
চতুর্থ বর্ষের ছাত্র আফসার আল তামিম (২৫) নামের এক যুবক নিখোঁজ হন। নিখোঁজের দুই দিন পর সোমবার বিকাল ৩টায় পদ্মা সেতু এলাকা থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরের কুন্ডের চর ইউনিয়নের সিডার চর এলাকার পদ্মা উপকূল থেকে নিখোঁজ ওই ছাত্রলীগ নেতার মরদেহ উদ্ধার করে জাজিরা থানা পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করে উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আহসান আসিফ বলেন, কলেজ ছাত্রলীগের যুগ্ম আহবায়ক তামিমের মরদেহ উদ্ধার করে জাজিরা থানায় নেয়া হয়েছে।চরফ্যাশন থানার ওসি মনির হোসেন মিয়া জানান, বিষয়টি নিয়ে পদ্মা থানার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে।

উল্লেখ্য,আল আফছার তামিম চরফ্যাসন পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সদ্য অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এম. মজির উদ্দিনের একমাত্র ছেলে। এক ভাই, এক বোনের মধ্যে তামিম ছিলো ছোট। নিহত তামিম চরফ্যাসন সরকারি কলেজের অনার্স অনার্স শেষ বর্ষের ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী ও চরফ্যাসন সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন।





উল্লেখ্য , শনিবার (২৫ জুন) দুপুরে আল আফছার তামিম, বিআইডবিøউটিএ’র সহকারী পরিচালক শরিফ ইসলাম, চরফ্যাসন উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মেহেদী হাসান সোহাগ, চরফ্যাসনের যুবলীগ নেতা আসাদুজ্জামান খান মামুনসহ ২৩ জন ট্রলার ডুবে পদ্মা নদীতে পড়ে যান। এ সময় পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের সিনিয়র সচিব কবির বিন আনোয়ার এর নেতৃত্বে একটি টিম দুঃসাহসিকভাবে ২২ জনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে, তখন থেকে তামিম নিখোজ ছিলেন।