অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, শুক্রবার, ২৯শে মার্চ ২০২৪ | ১৫ই চৈত্র ১৪৩০


সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে বিভিন্ন সংগঠনের নিন্দা


বাংলার কণ্ঠ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৮ই মে ২০২১ রাত ১০:২৮

remove_red_eye

৪৪৬

প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামকে আটকে রেখে শারীরিক নির্যাতন, গ্রেফতার ও তার নামে মামলা দেওয়ায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বিভিন্ন সংগঠন। মঙ্গলবার (১৮ মে) গণমাধ্যমে পাঠানো  বিবৃতিতে এই নিন্দা জানায় বিভিন্ন সংস্থা ও সংগঠন। এর মধ্যে আছে– মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন, আমরাই পারি জোট, সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন), ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) , কর্মজীবী নারী, হিউম্যান রাইটস ফোরাম বাংলাদেশ, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ, ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ), রিপোর্টার্স ফর বাংলাদেশি মাইগ্রেন্টস (আরবিএম), ঢাকা ইউটিলিটি রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ডুরা), ডিপ্লোম্যাটিক করেসপনডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (ডিক্যাব), ন্যাশনাল গার্ল চাইল্ড অ্যাডভোকেসি ফোরামসহ আরও সংগঠন।

বিবৃতিতে সংগঠনগুলো জানায়, সরকারি নথি চুরির অভিযোগ এনে দীর্ঘসময় ধরে একজন নারী সংবাদকর্মীকে আটকে রেখে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা রোজিনা ইসলামের সঙ্গে যে ধরনের নিপীড়নমূলক আচরণ করেছেন, তা শুধু শিষ্টাচার বহির্ভূতই নয়, তার প্রতি ক্ষোভের নগ্ন বহিঃপ্রকাশ।

বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে বিভিন্ন সময়ে সংঘটিত অনিয়ম ও দুর্নীতি এবং করোনা সংকট মোকোবিলায় প্রতিষ্ঠানটির সমন্বয়হীনতা, পেশাদারিত্বের যে ঘাটতি ও স্বরূপ রোজিনা ইসলামের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনগুলোতে উঠে এসেছে, এটাকে তারই ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া বিবেচনা করাই স্বাভাবিক। এ পর্যন্ত যারা কিছুটা হলেও নীতি ও নিষ্ঠার সঙ্গে সাংবাদিকতা করছেন, শত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার মাধ্যমে নিয়মিত জনস্বার্থ রক্ষার চেষ্টা করছেন, এটা তাদের জন্য দুর্নীতিবাজদের পক্ষ থেকে একটি হুঁশিয়ারি বার্তা বলে মনে করি। এর রেশ আমাদের ধারণারও বাইরে।’

‘আমরাই পারি জোট’ একজন স্বনামধন্য নারী সাংবাদিকের ওপর সরকারি কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের এই নির্যাতনের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং নির্যাতনকারীদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা প্রত্যাশা করছে। বিবৃতিতে সই করেছেন আমরাই পারি পারিবারিক নির্যাতন প্রতিরোধ জোটের চেয়ারপারসন সুলতানা কামাল এবং নির্বাহী সমন্বয়কারী জিনাত আরা হক।

পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে অনুসন্ধানী সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে অবরুদ্ধ রেখে লাঞ্ছিত করা ও মিথ্যা মামলা দায়ের করায় ‘কর্মজীবী নারী’ তীব্র নিন্দা প্রকাশ করেছে এবং ঘটনা সুষ্ঠু তদন্ত করে এর সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে।

মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন-এমজেএফ প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামকে সচিবালয়ে আটকে রেখে শারীরিক ও মানসিক নিপীড়নের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। একই সঙ্গে রোজিনাকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার দাবি জানিয়েছে। এমজেএফের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম বলেন, ‘দীর্ঘ সময় ধরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিবের একান্ত সচিবের কক্ষে একজন সাংবাদিককে বিশেষ করে একজন নারী সাংবাদিককে আটক রাখার ঘটনাটি নিন্দনীয়। রোজিনা অসুস্থ হয়ে পড়লে তার চিকিৎসার কোনও ব্যবস্থা না করে, থানা হাজতে পাঠিয়ে দেওয়ার ঘটনাটি অমানবিক। এমজেএফ দ্রুত এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করছে।’

সুশাসনের চন্য নাগরিক- সুজন মনে করে,  রোজিনা ইসলামের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, তা অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক। এই ঘটনাকে স্বাধীন ও অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা এবং মুক্ত গণমাধ্যমের প্রতি হুমকি বলেই আমরা মনে করি। একজন নারী সাংবাদিকের ওপর স্বাস্থ্য  বিভাগের এরকম আচরণ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। তাই  ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের যথোপযুক্ত বিচার দাবি করছি।

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ অবিলম্বে রোজিনা ইসলামের মুক্তি ও তার সুচিকিৎসার দাবি জানিয়েছে এবং নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে এই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানায়।

ডিক্যাব রোজিনা ইসলামের ওপর নিপীড়নের তীব্র নিন্দা জানায় এবং তাকে হেনস্তাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য দাবি জানায়। সংগঠনটির সভাপতি পান্থ রহমান এবং সেক্রেটারি এ কে এম মইনুদ্দিনের সই করা বিবৃতিতে একথা জানানো হয়।

প্রথম আলোর সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর ঘটনায় গভীর উদ্বেগ, নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে রিপোর্টার্স ফর বাংলাদেশি মাইগ্রেন্টস (আরবিএম)। মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে আরবিএম সভাপতি ফিরোজ মান্না ও সাধারণ সম্পাদক মাসউদুল হক এ নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।