অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, বৃহঃস্পতিবার, ২৮শে মার্চ ২০২৪ | ১৪ই চৈত্র ১৪৩০


ভোলায় লক্ষ্যমাত্রার চাইতে বেশি জমিতে সূর্যমুখীর আবাদ


বাংলার কণ্ঠ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ৫ই এপ্রিল ২০২১ রাত ১০:৪০

remove_red_eye

৪৭৯

হাসনাইন আহমেদ মুন্না \ ভোলায় চলতি মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রার চাইতে ২০ হেক্টর বেশি জমিতে সূর্যমুখীর আবাদ হয়েছে। ১৫০ হেক্টর জমিতে সূর্জমুখী চাষের টার্গেট থাকলেও হয়েছে ১৭০ হেক্টর জমি। নির্ধারিত জমি থেকে ৩১৫ মেট্রিক টন সূর্জমূখী উৎপাদনের টার্গেট গ্রহণ করেছে কৃষি বিভাগ। এছাড়া হেক্টর প্রতি উৎপাদন ধরা হয়েছে ২ দশমিক ১০ মে:টন করে। এদিকে সূর্জমূখী আবাদের জন্য জেলায় ৩ হাজার কৃষককে প্রণোদনা প্রদান করা হয়েছে। আর ২’শ কৃষককে করা হয়েছে পূর্ণবাসন। ফলে গত বছরের চাইতে এ বছর বেড়েছে আবাদী জমির পরিমাণ।
সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো: রিয়াজউদ্দিন বলেন, সদরে গত বছরের চাইতে এবছর ৫ হেক্টর বেশি জমিত আবাদ হয়েছে সূর্জমুখী। এখানে সাধারণত জানুয়ারির প্রথম থেকে সূর্জমূখীর বীজ রোপন করা হয়। ১১৫ থেকে ১২০ দিনের মধ্যে কৃষকরা ফলন ঘরে তুলতে পারে। ভোলায় ২ টি জাতের সূর্জমূখীর চাষ করা হয়। একটি হলো হাইব্রীড হাইসেন-৩৩ ও অন্যটি কৃষি গবেষণা থেকে উদ্ভাবিত বাড়ি সূর্জমুখীর-৩ জাত। এই জাতগুলো লবনাক্ততা ও খরা সহি¯œু। তাই এর ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে এই অঞ্চলে।
কৃষি কর্মকর্তারা জানান, সরকারিভাবে প্রনোদণার জন্য ৩ হাজার কৃষককের মধ্যে প্রত্যেককে এক বিঘা জমির অনুকুলে ২ কেজি উন্নত জাতের বীজ, ডিএপি সার ২০ কেজি ও এমওপি সার ১০ কেজি করে দেওয়া হয়েছে। ফলে উৎসাহী হচ্ছে কৃষকরা সূর্জমূখী আবাদে।
উপজেলা সদরের ভেলুমিয়া ইউনিয়নের চর-চন্দ্র প্রসাদ গ্রামের কৃষক আব্দুল গনি বলেন, তিনি এই প্রথম সূর্জমুখীর চাষ করেন। সরকারিভাবে প্রনোদণা পাওয়া তার তেমন একটা খরচ হয়নি বল্লেই চলে। প্রতিটি গাছেই ফুল এসেছে। কিছুদিন পর ফলন ঘরে তুলবেন। কৃষি অফিস থেকে সব ধরনের সহায়তা পান বলেও জানান তিনি। র্পাশ্ববর্তী চরগাজী গ্রামের সূর্জমুখীর কৃষক মো: শেখ ফরিদ জানান, তার ক্ষেতেও ভালো ফলন এসেছে। আশা করছেন ভালো দাম পেয়ে লাভবান হবেন।
উপ-সহকারী উদ্বিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা মো: হুমায়ুন কবির জানান, জেলায় এবছর ১৫০ টি সূর্জমূখীর প্রদর্শনীর ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। সাধারণত এক কেজি সূর্জমূখী থেকে সাড়ে ৪’শ থেকে ৫’শ গ্রাম তেল উৎপাদন করা সস্বভ। মোট উৎপাদনকৃত সূর্জমুখী থেকে ১’শ ৫৭ মে:টন তেল উৎপাদন হবে বলে জানান তিনি।
জেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, জেলার ৭ উপজেলায় সূর্জমূখী আবাদের মধ্যে সদর উপজেলায় ১৫ হেক্টর জমিতে লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ৩০ হেক্টর আবাদ হয়েছে। দৌলতখানে ২০ হেক্টরের বিপরীতে ৩৫ হেক্টর। বোরহানউদ্দিনে ১৫ হেক্টরের বিপরীতে ৪০ হেক্টর। লালমোহনে লক্ষ্যমাত্রা ১০ হেক্টর, আবাদ ১৫ হেক্টর। তজুমদ্দিনে ১০ হেক্টরের বিপরীতে হয়েছে ১০ হেক্টর। চরফ্যাসনে ৭৫ হেক্টরের বিপরীতে ৫০ হেক্টর এবং মনপুরায় ৫ হেক্টরের মধ্যে ৫ হেক্টর আবাদ হয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবু মো: এনায়েতউল্লাহ জানান, সূর্জমূখীর তেল অনেক স্বাস্থ্য সম্মত। আমরা শরিষার পরেই সূর্জমূখীকে রেখেছি তেলের জন্য। সরকার এর উৎপাদন বৃদ্ধিতে উদ্যেগ গ্রহণ করায় সারা দেশেই এর ব্যাপক আবাদ হয়েছে এবছর। সূর্জমূখী তেল ছাড়াও বীজ হিসাবে বেশ ভালো দাম পাওয়া যায়। কৃষকদের যে কোন সমস্যা সমাধানে আমাদের মাঠ পর্যায়ের কর্মীরা নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করছেন বলে জানান তিনি।