বাংলার কণ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২৪শে ডিসেম্বর ২০২৪ রাত ০৯:১৩
৯৬
বাংলার কণ্ঠ প্রতিবেদক : খোলা আকাশের নিচেই তাবুতে বসবাস করছেন বেঁদে সম্প্রদায়ের মানুষেরা। দুমুঠো খাবারের জন্য পথে প্রান্তরে কিংবা নদীর তীরে ছোট তাবু বা টংঘরে চলে এই সম্প্রদায়ের জীবন।
দেশের সকল পেশায় আধুনিকতার ছোঁয়ায় জীবন মানের উন্নয়ন হলেও অন্য এক জীবন যুদ্ধ করছেন বেঁদে স¤প্রদায়ের মানুষেরা।
এখানে বেঁদে সম্প্রদায় শ্রেণির মানুষের জীবন যুদ্ধ যেন এক বিবিশিকাময়। তারা কি খেয়ে বাঁচে এবং কিভাবে জীবন যাপন করে বা তাদের কেউ মৃত্যু বরণ করলে শেষ পরিনতি দাফনটাও কিভাবে হচ্ছে এমন খবর রাখার যেন কেউ নেই। এমনটাই জানাগেছে বেদে বহরে থাকা মানুষের কাছে।
বেদে স¤প্রদায়ের জীবন ব্যবস্থা এবং তাদের হাসি-কান্না, আনন্দ-বেদনা নিয়ে রচিত হয়েছে অনেক গল্প-উপন্যাস, নির্মিত হয়েছে নাটক ও সিনেমা। কিন্তু তার পরও কষ্টের মধ্যে দিন পার করছে দেশের একমাত্র যাযাবর শ্রেণিভুক্ত মানুষ বেদে স¤প্রদায়।
তেমনি এক বেঁদে সর্দার ফরিদ মিয়া, ফরিদ মিয়ার আদিবাস ঢাকার সাভারের মাংতা পাড়া হলেও জীবিকার তাগিদে বছরের ১১ মাস ধরেই থাকে যাযাবর হিসেবে দেশের প্রত্যান্ত অঞ্চলের গ্রামীণ জনপদ কিংবা নদীর তীরে।
তাদের জীবিকার অন্বেষনে তারা পরিবারের সদস্যগনকে নিয়ে বছরের পুরো এগারো মাস গাওয়ালে থাকেন। তারা স্বামী শ্ত্রী দুজনেই সমানে সমান কাজ করেন জীবিকার তাগিদে। কেউ বাঁনর খেলা দেখিয়ে আনন্দ দিয়ে সামান্য টাকা আয় করেন, কেউবা শিংগা লাগান, কেউ আবার গাছ গাছালীর টুকরো ঔষধি ভেষজপাতাধী বিক্রি করেন। কেউ আবার সাপের খেলা দেখিয়ে চালাছেন জীবিকা এমন উক্তি প্রকাশ করে ভোলার একমাত্র প্রবেশদ্বার ইলিশা ঘাটে ৬টি পরিবারের বহর নিয়ে অস্থায়ী আবাসন টংঘর তৈরি করে থাকা বেঁদে ফরিদ। তিনি বলেন আমরা আজ ৮ দিন যাবৎ এখানে আছি। আরো কদিন থাকবো আমার শ্ত্রী সহ এই বহরের সবার শ্ত্রী সকালে ময়ালে/(গ্রাম বা গাওয়াল) গেছে।
আমরা পুরুষরা বাসায় আছি, তারা ফিরলে আবার বিকালে আমরা কাজে বের হবো।
মাংতা,মনটং বা বেঁদে স¤প্রদায়ের লোকেরা নদীতে নৌকায় বা নদীর তীরে ছোট ছোট ঝুপড়ি তৈরি করে বাস করে। তবে তাদের মনটং,মাংতা,বা বেঁদে সম্প্রদায় বলেই আখ্যায়িত করে। এ সম্প্রদায়ের অধিকাংশ সাপ সম্পর্কিত ব্যাবসায় জীবন যাপন করে, সাপ খেলা, সাপ ধরা, বাঁনর খেলা, বাঁনর পোষা,তারা ভেষজ ওষধ বিক্রি করে থাকে। তারা প্রকাশ করে তাদের ভেষজ উপকরনে বিশেষ যাদুকরী গুন আছে। তাদের ক্ষুদ্র ব্যাবসার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে সাপের তাবিজ বিক্রি, সাপের খেলা ও বাঁনর খেলা দেখানো।
ইলিশার এ বহরে থাকা আরেক বেঁদে সদস্য বাদশা মিয়া তিনি বলেন আমার বয়স প্রায় ৭৫ বছর। আমার জম্মটাও হয়েছিল গাওয়লে। এখন আবার আমার মেয়ের উদরে একটি নাতিরও জম্ম হয়েছে এই গাওয়ালে এসে। শিশু নাতিটির বয়স মাত্র ৪ মাস হলো।
মেঘনার তীরে হীমেল বাতাসে প্রচন্ড ঠান্ডার মধ্যে কেমন কাটছে আপনাদের জীবন? এমন প্রশ্নের জবাবে বাদশা মিয়া জানালেন আমাদের এ টঙগে থাকার অভ্যাস নতুন নয় বেশ পুরনো, আমার জীবনের ৭৫ বছরের সর্বোচ্চ ৫বছর কেটেছে নিজ গাঁ সাভারে মাংতা পাড়ায়, তাও একটানা ৫ বছর নয় বছরে কোরবানি ঈদের সময় একমাস মাংতা পাড়ায় থাকি আমরা বাকি সময় গাওয়ালেই কাটে।
তিনি আরো বলেন আমাদের স¤প্রদায়ের শতকরা ৯০/৯৫ জন দরিদ্রসীমার নিচেই বসবাস করছি।
আমাদের বিশুদ্ধ পানি পান কিংবা স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেসন ব্যাবস্থা নেই। এখানে এসে আমাদের কোন সমস্যা হয়নি তবে কে বা কাহারা যেন গত রাতে আমাদের অস্থায়ী টয়লেটে আগুন লাগিয়ে পুড়ে দিয়েছে। আপনার এখানে বেশ কজন কোমলমতি শিশুদের দেখা যায় তাদের শিক্ষা দিক্ষার সুযোগ দিচ্ছেন না কেন? এমন বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন ভাসমান ভাবে চলছে আমাদের জীবন যুদ্ধ, আমরা আজ এখানে কাল ওখানে এভাবে ভাসমান জীবন যাপনের শিশুরা শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিতই থেকে যাচ্ছে।
শিক্ষা দিক্ষা নেই বলেই এখন আমাদের সম্প্রদায়ের লোকদেরকে মানুষ তুচ্ছতাচ্ছিল্য বা অবজ্ঞা করেই দেখে। আমাদের সাথে কেউ মিশতে চায় না, আমরা সমাজে ভালো ভাবে বাচতে চাই,আমরাও সুন্নি মুসলমান, চাই আমাদের সন্তানদের সাধারণ শিক্ষা বা ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিত করেরগড়ে তুলতে, কিন্তু দরিদ্রতা আর সমাজের অবজ্ঞা আমাদের প্রধান বাধা।
গাওয়ালে আপনাদের কেউ মারা গেলে কি করেন? এমন কথার জবাবে ছলছল চোখে ফরিদ মিয়া বলেন আমাদের কারো সামর্থ থাকলে বাড়ি (সাভার) মাংতা পাড়ায় নিয়ে যায়, আর না থাকলে বহরের কাছাকাছি সরকারি গোরস্থান থাকলে মুসলিম বিধানমতে সেখানে দাফন করা হয়। আর সরকারি গোরস্থান না থাকলে দাফনের জন্য স্থানীয় সুশীল সমাজ সহায়তা করেন।
এ বিষয়ে ভোলা সমাজ সেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক রজত শুভ্র সরকার বলেন বেদে স¤প্রদায়ের ভাসমান মানুষের জীবনমান উন্নয়নের জন্য পঞ্চাশোর্ধ বয়সীদের জন্য ভাতা প্রদানের ব্যবস্থা রয়েছে, এ সুবিধা ভোগীরা অনলাইনে আবেদন করতে পারেন। অপরদিকে তাদের পরবর্তী প্রজন্মকে সনির্ভর করতে এবং তাদেরকে শিক্ষায় মনোযোগী হওয়ার জন্য প্রাথমিক উপবৃত্তি প্রদান করা হচ্ছে। তবে তারা আমার জেলার স্থায়ী বাসিন্দা হলে আবেদনের প্রেক্ষিতে সুবিধা প্রদান করা হবে। তারা ভাসমান হলে এনআইডি যেখানে করা হয়েছে সেখানেই আবেদন করলে সুবিধাদী ভোগ করতে পারবেন। আমরা সমাজ সেবা সরকারি অধিদপ্তর বেঁদে স¤প্রদায়ের জনগোষ্ঠীকে সমাজে অন্য সব সাধারণ মানুষের মত জীবন যাপন করার সুযোগ তৈরিতে বদ্ধপরিকর।
হাসপাতাল ছেড়ে ছেলের বাসায় উঠেছেন বেগম খালেদা জিয়া
ভোলায় প্রায় ১৮ বছর পর আজ জামায়াতের কর্মী সম্মেলন
তারুণ্যের উৎসব উপলক্ষ্যে ভোলায় অনুর্ধ্ব ১৭ ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত
ভোলার পরানগঞ্জে নাইট ক্রিকেট টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত
মনপুরায় দুস্থদের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণ
চরফ্যাশনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের কবর জিয়ারত করলেন বিএনপি নেতা নাজিমউাদ্দন আলম
চরফ্যাশনে শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণ
ভোলায় ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের নতুন কমিটির শপথ গ্রহণ
চরফ্যাসনে ব্যাংকে গিয়ে মারধরের শিকার গ্রাহক
অন্তর্বর্তী সরকার যাতে ব্যাথ্য না হয় দেশী বিদেশী চক্রান্ত চলছে : নাজিম উদ্দিন আলম
ভোলায় পাঁচ সন্তানের জননীকে গলা কেটে হত্যা
ভোলার ৪৩ এলাকা রেড জোন চিহ্নিত: আসছে লকডাউনের ঘোষনা
ভোলায় বিষের বোতল নিয়ে বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে প্রেমিকা
ভোলায় বাবা-মেয়ে করোনায় আক্রান্ত, ৪৫ বাড়ি লকডাউন
উৎসবের ঋতু হেমন্ত কাল
ভোলায় এবার কলেজ ছাত্র হত্যা, মাটি খুঁড়ে লাশ উদ্ধার
ভোলায় প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন করোনা রোগী: এলাকায় আতংক
ভোলার চরফ্যাশনে করোনা উপর্সগ নিয়ে এক নারীর মৃত্যু
ভোলায় কুপিয়ে হত্যা করে ব্যবসায়ীর টাকা ছিনতাই, আটক এক
ভোলায় ব্যাংক কর্মকর্তাসহ আরও ৬ জনের করোনা শনাক্ত