অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, শনিবার, ৭ই ডিসেম্বর ২০২৪ | ২৩শে অগ্রহায়ণ ১৪৩১


আজ সেই ভয়াল ১২ নভেম্বর


বাংলার কণ্ঠ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১১ই নভেম্বর ২০২৪ রাত ১০:২৮

remove_red_eye

৭৮



ভোলায় দুর্গম চরাঞ্চলের  মানুষকে এখনো থাকতে দুর্যোগ ঝুঁকিতে




হাসিব রহমান : আজ সেই ভয়াল ১২ নভেম্বর। ভোলাসহ উপকুলবাসীর বিভিষীকাময় এক দুঃস্বপ্নের দিন। ১৯৭০ সালের এই দিনে বিস্তীর্ন এলাকা লন্ডভন্ড হয়ে ধ্বংস লীলায় পরিনত হয়। মুহুত্বের মধ্যেই প্রলংয়নকারী ঘুর্ণীঝড় ও জলচ্ছাস ক্ষত বিক্ষত করে দেয় বিভিন্ন এলাকার জনপদ। উপক‚লীয় জনপদ গুলো মৃত্যু পুরীতে পরিণত করে দেয় । ওই ঝড়ে ভোলায় হারিয়ে যায় দের লক্ষাধিক প্রাণ। নিখোঁজ হয় সহস্রাধিক মানুষ। এক এক করে ৫৪ বছর পেরিয়ে গেলেও আজও কান্না থামেনী স্বজন হারা মানুষের। রয়ে গেছে সেই ক্ষত।  কিন্তু এতো বছর পরও ঘুর্ণিঝড় ও জলোচ্ছাস থেকে রক্ষায় ভোলায় প্রয়োজনীয় পর্যাপ্ত আশ্রয় কেন্দ্র গড়ে উঠেনি। তাই দুর্গম চরাঞ্চলের মানুষ আজো প্রাকৃতিক দুর্যোগ আর জলোচ্ছাসের ঝুঁকিতে রয়েছে। তাই ভোলা জেলায় পর্যাপ্ত আশ্রয় কেন্দ্র নির্মান ও দুর্যোগকালীন নিরাপদ উদ্ধারকারী নৌযানের দ্রæত ব্যবস্থা করা হলে দুর্যোগ ঝুঁকি থেকে রক্ষা পাবে দ্বীপ জেলা ভোলার প্রায় ২২ লাখ মানুষ।

৭০’র এর ১২ নভেম্বর। দিন ভর ছিলো গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি ও ঝড়ো বাতাস। সন্ধ্যার পর মুহুর্তের মধ্যেই ভয়াঙ্কর রুপ ধারন করতে থাকে ঝড় । গভীর রাতে শুরু হয় ঝড়ের তান্ডব। হারিকেনরুপী জলচ্ছাসের সময় ঝড়টি ভোলাসহ উপকূলীয় ১৮ টি জেলায় আঘাত হানে।  তৎকালীন সময় তথ্যপ্রযুক্তি অনেকটা দুর্বল থাকায় উপকুলে অনেক মানুষই ঝড়ের পূর্বভাস পায়নি। এ সময় তিন দিকে নদী ও একদিকে সাগর বেষ্টিত দ্বীপজেলা ভোলায় জলচ্ছাস হয়েছিল ৮/১০ ফুট উচ্চতায়। রাস্তা-ঘাট, ঘর-বাড়ি, খাল-বিল, নদী-নালয় ভাসছিল লাশ আর লাশ। এমনকি গাছের সাথে ঝুলে ছিল শত শত মানুষের মৃতদেহ। বহু মানুষ তাদের প্রিয়জনের লাশ খুঁজেও পায়নি। তখন বাঁচতে কেউ গাছের ডালে, কেউ উচু ছাদে আশ্রয় নিয়ে কোনমতে প্রানে রক্ষা পেলেও ১০দিন পর্যান্ত তাদের প্রায় অভুক্ত কাটাতে হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।   

প্রলঙ্কারী সেই বিভৎস ঝড়ের তান্ডবের খবর ঘটনার ৪ দিন পর তখন পূর্ব দেশ পত্রিকার প্রকাশ হলে দেশবাসীসহ বিশ্ববাসী জানতে পারে। তৎকালিন পূর্ব দেশ পত্রিকার ভোলার সাংবাদিক ও বর্তমানে স্থানীয় দৈনক বাংলার কণ্ঠের সম্পাদক এম. হাবিবুর রহমান জানান, তিনি ১২ নভেম্বর ঝড়ের পরের দিন সকালে ভোলার শিবপুর এলাকায় গিয়ে দেখেন, অসংখ্য লাশ রাস্তাঘাটে পড়ে রয়েছে। মেঘনা নদী দিয়ে ভেসে যা”েছ লাশ আর লাশ। গাছে গাছে ঝুলে আছে লাশ। তখন তিনি ছবি তুলেন। এর পর পুলিশ ওয়ারলেসের সহযোগীতায় ঢাকায় পত্রিকা অফিসে নিউজ প্রেরণ করেন। আর ছবি মাছধরা ট্রলারে করে ঢাকায় পাঠান। তার পূর্বদেশ পত্রিকায় ছাপা হয় কাদো বাঙ্গালী কাদো,ভোলার গাছে গাছে ঝুলছে লাশ। প্রলঙ্কারী সেই বিভৎস ঝড়ের তান্ডবের খবর ঘটনার ৪ দিন পর তখন পূর্ব দেশ পত্রিকার প্রকাশ হলে দেশবাসীসহ বিশ্ববাসী জানতে পারে। প্রবীণ সাংবাদিক এম হাবিবুর রহমান বলেন, ১৯৭০ সালের ১২ নভেম্বর রাতে ভয়াল ঘূর্ণিঝড় গোর্কির ছোবলে লন্ড-ভন্ড হয়ে গিয়েছিলো ভোলার বিস্তীর্ণ জনপদ। জেলার মনপুরা, চরফ্যাসন, চর নিজাম, ঢালচর, কুকরি-মুকরিসহ গোটা এলাকা মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছিলো।

এদিকে দ্বীপজেলা ভোলার মানুষকে প্রতিবছর একাধিক প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঝড় জলোচ্ছাস মোকাবেল করে বসবাস করতে হয়। ভোলার কাচিয়া মাঝের,মদনপুর, চর জহিরুদ্দিন, চর মোজাম্মেল, কলাতলীরচর, চরনিজাম, ঢালচর, কুকরি-মুকরি, চর পাতিলাসহ জেলার অর্ধশতাধিক চরাঞ্চলে প্রয়োজনের তুলনায় আশ্রয় কেন্দ্রের সংখ্যা কম হওয়ায় এসব এলাকায় কয়েক লাখ মানুষ চরম ঝুঁকিতে বাস করছে।

ভোলা ঘুর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি’র) কর্মকর্তা মো: আবদুর রশিদ সাংবাদিকদের জানান জানান, ভোলা জেলায় ঘুর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র রয়েছে ৮৭৯টি এবং গবাদিপশুর জন্য কিল্লা রয়েছে ১৪টি। এ অবস্থায় ভোলায় যে পরিমান আশ্রয়কেন্দ্র আছে তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল ।  যে কোন দুর্যোগ এলেই চরাঞ্চল থেকে মানুষকে অনেক ঝুঁকি নিয়ে মূল ভূ-খন্ডে নিরাপদ আশ্রয়ে আনতে হয়। নির্ভরযোগ্য নৌযানের অভাবে চরাচঞ্চল থেকে আবার অনেকে নিরাপদে সরিয়ে আনা সম্ভব হয়না। তখন চরম ঝুঁকি নিয়ে চরেই বসবাস করতে হয় তাদের। তাই আরো আশ্রয় কেন্দ্র ও দুর্যোগকালীন সময়ের জন্য নিরাপদ উদ্ধারকারী নৌযান জরুরী বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

ভোলা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা  সজল চন্দ্র শীল জানান,  অবাধ তথ্য প্রযুক্তির কারনে প্রত্যন্ত অঞ্চলেরর মানুষ আগেই আবহাওয়ার পূর্বভাস পেয়ে সর্তকর্তা অবলম্বন করতে পারে। পর্যাপ্ত আশ্রয় কেন্দ্র থাকলেও মানুষের প্রত্যাশা অনুযায়ী আরো পর্যাপ্ত  সাইক্লোনসেল্টারের বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কর্তৃপক্ষ জানানো হয়েছে। তা হয়ে যাবে বলে তিনি প্রত্যাশা করেন।
এদিকে এই দিনটিতে স্বজনহারা পরিবারের সদস্যরা দেয়া মোনাজাতের আয়োজন করে। এছাড়াও এই দিনটিকে উপকূল দিবস ঘোষনার দাবীতে ভোলায় প্রেসক্লাবের সামনে সকালে মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়েছে।





হয়রানিমূলক মামলা ও গ্রেফতার ঠেকাতে সজাগ পুলিশ: অতিরিক্ত কমিশনার

হয়রানিমূলক মামলা ও গ্রেফতার ঠেকাতে সজাগ পুলিশ: অতিরিক্ত কমিশনার

জনগণের নয়, পুলিশ চাঁদাবাজ-সন্ত্রাসীর প্রতিপক্ষ: সিটিটিসি প্রধান

জনগণের নয়, পুলিশ চাঁদাবাজ-সন্ত্রাসীর প্রতিপক্ষ: সিটিটিসি প্রধান

সংস্কারের উসিলায় অনির্দিষ্টকাল ক্ষমতায় থাকা বুদ্ধিমানের কাজ নয় : খন্দকার মোশাররফ

সংস্কারের উসিলায় অনির্দিষ্টকাল ক্ষমতায় থাকা বুদ্ধিমানের কাজ নয় : খন্দকার মোশাররফ

ভারত বিশ্ববাসীকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে: রিজভী

ভারত বিশ্ববাসীকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে: রিজভী

জাতির কাছে ক্ষমা চাইলেন দক্ষিণ কোরীয় প্রেসিডেন্ট

জাতির কাছে ক্ষমা চাইলেন দক্ষিণ কোরীয় প্রেসিডেন্ট

তজুমদ্দিন ও লালমোহনে ধানের র্শীষ  প্রতীকের লিফলেট বিতরণ পথসভা

তজুমদ্দিন ও লালমোহনে ধানের র্শীষ প্রতীকের লিফলেট বিতরণ পথসভা

ভোলায় ট্রাক ও মোটরসাইকেল সংঘর্ষে স্কুল ছাত্র নিহত

ভোলায় ট্রাক ও মোটরসাইকেল সংঘর্ষে স্কুল ছাত্র নিহত

ভোলায় শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের দ্বি- বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত

ভোলায় শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের দ্বি- বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত

ভোলায় স্ত্রীর মরদেহ রেখে পালালেন স্বামী

ভোলায় স্ত্রীর মরদেহ রেখে পালালেন স্বামী

দৌলতখান নারী নির্যাতনের ঘটনায় ভণ্ড হারুন গ্রেফতার

দৌলতখান নারী নির্যাতনের ঘটনায় ভণ্ড হারুন গ্রেফতার

আরও...