এআর সোহেব চৌধুরী, চরফ্যাশন প্রতিনিধি: সার্জন পদ্ধতিতে সবজি আবাদ করে খুশি চাষিরা। জৈব সার ব্যবহার করে সারাবছর নিরাপদ বিষমুক্ত সবজি চাষ করে অধিক মুনাফা হওয়ায় চাষিরা সার্জন পদ্ধতি ব্যবহার করে সবজী উৎপাদন করে লাভবান হওয়ায় উৎসাহিত হয়ে চাষিরা এ পদ্ধতি অনুসরণ করছে। চরফ্যাশন উপজেলার আমিনাবাদ ইউনিয়নের হালিমাবাদ গ্রামের কৃষক আক্তার মহাজন বলেন, বিষমুক্ত নিরাপদ সবজি উৎপাদন করতে উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে রাসায়নিক সার ব্যবহার না করে জৈব ও কেচোঁ সার দিয়ে ৫শতাংশ জমিতে সার্জন পদ্ধতিতে আবাদ শুরু করি। বর্তমানে চাষাবাদ বৃদ্ধি করে প্রায় ৫ একর জমিতে সার্জন পদ্ধতিতে চাষাবাদ করছি। তিনি আরও জানান, প্রথমে জমি থেকে মাটি কেটে উঁচু আড়া বাঁধা হয়। আড়ার ফাঁকে নালা তৈরি করে আড়ার ওপর বিভিন্ন সবজি চারাগাছ রোপণ করা হয়। পাশাপাশি আড়ার নালাতে তেলাপিয়া, রুই, পাঙ্গাস, মাগুরসহ বিভিন্ন প্রজাতির কার্প জাতীয় মাছ চাষ করেন এ চাষি। এ পদ্ধতিতে বর্ষা মৌসুমে পানিতে জমির আড়া ডুবেনা। বিষমুক্ত হওয়ায় সার্জন পদ্ধতিতে মাছ ও সবজি চাষ করে বেশ লাভবান হওয়া যায়। এই পদ্ধতিতে সারাবছর হাট-বাজারে বিষমুক্ত সবজি বিক্রি করার পাশপাশি নিজের পরিবারেরও সবজির চাহিদা পূরণ করা যায়। নীলকমল ইউনিয়নের ঘোষেরহাট গ্রামের কৃষক খলিল মিয়া জানান, উপকূলীয় অঞ্চলে বিভিন্ন সময়ে প্রাকৃতিক ঝড় তুফানের সময়ে লবনাক্ত পানিতে ধানের ফলন কম হওয়ায় কৃষকরা সার্জন পদ্ধতি ব্যবহার করে বিষমুক্ত সবজি আবাদের দিকে ঝুঁকছেন। এলাকার ৪০ জন কৃষকের সমন্বয়ে গঠিত তেঁতুলিয়া পাড়ের চাষিরা শত হ্যাক্টর জমিতে সম্মিলিতভাবে সার্জন পদ্ধতিতে শশা,শিম,লাউ,পেপে,কুমড়ো ও লাল শাক এবং টমেটো উৎপাদন করেন। প্রতি একরে সবজি উৎপাদনের খরচ হয় প্রায় আশি হাজার থেকে এক লাখ টাকার মতো। আর লাভ হয় দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা। নালায় মাছ চাষে সারাবছর পানি থাকায় সেচ সুবিধায় খরচ কম বলে মনে করেন চাষিরা। মাছ চাষে একর প্রতি আয় হয় চল্লিশ থেকে পঞ্চাশ হাজার টাকা। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর এ উপজেলায় প্রায় আটশত হেক্টর জমিতে সার্জন পদ্ধতিতে সবজি আবাদ করেছেন কৃষকরা। জলাবায়ুর নেতিবাচক প্রভাবের সাথে মোকাবেলায় সক্ষম হয়ে উঠছে কৃষকরা। কিটনাশক ব্যবহার না করে ফেরোমন ফাঁদ ব্যবহার করায় বাজারে বিষমুক্ত সবজির চাহিদা বেশি। তবে চাষিরা জানান, এই পদ্ধতিতে চাষাবাদে উপজেলা কৃষি অফিস যদি জলবায়ু সহিষ্ণু চাষাবাদে সঠিক দিক নির্দেশনা ও পরামর্শ দেয় তাহলে এ অঞ্চলের কৃষকরা অধিক মুনাফা ও ভোক্তারাও খুশি হবে।